ময়মনসিংহ অফিসঃ নিখুঁত দৈহিক গড়ন শুনতে যতটা শারীরিক বুঝায়, কিন্তু এটা প্রকৃতপক্ষে সম্পূর্ণ মানসিক ব্যাপার। আমাদের সমাজে সাধারনত শারীরিক কাঠামোর উপর ভিত্তি করেই একজন মানুষকে বিচার করা হয়! আমরা প্রায় সময়ই ছেলে মেয়েদের বলতে শুনি ‘আমি মোটা হয়ে যাচ্ছি’। ‘
আমার জিমে যেতে হবে’ আরও কত কি! আমি নিজেও বলি আমার ছেলেও বলে।।
নিজের জন্য ভাবা, নিজেকে ফিট রাখা বা সুস্থ্য রাখা উত্তম অভ্যাস।
দেহের গড়ন নিয়ে চিন্তা করা ভাল কিন্তু তা যেন সমাজ নিয়ন্ত্রিত না হয়। বরং স্বাস্থ্য সচেতনতা থেকে যেন সেই ভাবনা আসে।
আজকাল ব্যায়াম করে শরীরকে পারফেক্ট শেপ-এ নিয়ে আসার প্রবণতা শুরু হয়েছে।
তবে এটি আমাদের উপর শারীরিক উন্নতির চেয়ে মানসিক চাপ বৃদ্ধি বেশি করে!
এর প্রধান কারন হিসেবে মিডিয়া-কে ধরা যায়। কেননা বিভিন্ন মিডিয়ায় “সাইজ-জিরো”-র যে প্রতিমা চিত্রায়িত হয়েছে আমরা তা অন্ধের মত অনুকরন করে যাচ্ছি।
সমাজে যে কোন ট্রেন্ড আসা মাত্র তা অনুকরণ করা নিত্ত নৈমিত্তিক অভ্যাস।
মিডিয়াতে যে শুধু “সাইজ-জিরো”কে প্রমোট করে তা নয় বরং রং ফর্সা করা, শারীরিক সামর্থ্য বৃদ্ধির ম্যাজিক, দাম্পত্যজীবন নিয়েও চমকপ্রদ প্রচারণা! সব মিলিয়েই বিভ্রান্তিকর মানসিক অস্থিরতা তৈরী হয়।
বন্ধু মহলে আমরা প্রায় সময়ই মোটা হওয়ার কারনে হাসির পাত্রে পরিণত হই। বন্ধুরা ফিট থাকতে মোটিভেট করলেও এক সময় সেই মোটিভেশান আমাদের মানসিক চাপ বাড়িয়ে দেয়। নিখুঁত দৈহিক গড়ন অর্জনের এক পর্যায়ে আপনার মানসিক শান্তির অবক্ষয় ঘটে।
★আপনি ভুগতে থাকেন হীনমন্যতায়! আপনার আত্মসম্মানবোধের হানি ঘটতে থাকে। ফলে আপনি বিষণ্ণতায় পড়ে যেতে পারেন।
এভাবে চলতে থাকলে ফলাফল আরও খারাপ আকার ধারন করবে।
★আমি বলবো না যে, যেমন আছেন তা মেনে নিন।
**তবে আপনি আপনার দৃষ্টিভঙ্গি বদলাতে পারেন। নামাজ, প্রার্থনায় মনে শান্তি আসে। প্রথমেই প্রয়োজন মনের শুদ্ধতা এবং শান্তি।♥
ব্যায়াম করুন, হাটুন, ভ্রমন করুন, জিমে জয়েন করুন কিংবা ডায়েট করুন তবে কোন মানসিক চাপে পড়ে বাধ্য হয়ে নয়। বরং নিজেকে আরও ফিট, সুস্থ্য ও সুন্দরভাবে জীবনে প্রতিষ্ঠা করার জন্য।
★নিজেকে নিজের জন্য গড়ে তুলুন, সমাজ নিয়ন্ত্রিত চিন্তাধারা অনুকরণ করে নয়।
★আমাদের আশেপাশে উৎসাহ দেওয়ার পাশাপাশি নিরুৎসাহ করার মানুষও কম নয়। চেষ্টা করুন পজিটিভ মানুষদের আশেপাশে থাকার!
★যেন আপনি আত্মবিশ্বাস না হারিয়ে ফেলেন। এমন মানুষের মাঝে থাকুন যে আপনার মোটা হওয়া বা স্লিম হওয়া নিয়ে নেতিবাচক কথা বলে বিভ্রান্ত করতে না পারে।
আত্মবিশ্বাস রাখুন নিজের উপর।
★অন্যের জন্য নয় বরং নিজের কাছে ভাল লাগে বলেই আপনি সুন্দর এবং ভালো থাকার চেষ্টা করবেন।
শরীর চর্চার মাধ্যমে ফিট থাকুন, সুস্থ্য থাকুন।খাদ্যাভ্যাস এ পরিবর্তন আনুন, স্বাস্থ্যসম্মত খাবার গ্রহণের অভ্যাস করুন। নিজের প্রয়োজন এ ভাল থাকার জন্য mentally. এবং physically সুন্দর থাকুন।জ্ঞান চর্চা, পার্সনালিটি ধরে রাখুন।
যেকোন সুঅভ্যাস একবার হয়ে গেলে তা আপনার ভালো থাকার জন্য সহায়ক হবে।
RB. 25/09/19
লেখকঃ অধ্যাপক রোখসানা বেগম
পরিচালক, এইচএসটিটিআই,ময়মনসিংহ।